Posts

Showing posts from July 28, 2021

৬২-প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি কি।

Image
৬২ প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন স্বধর্ম দেশক বিদর্শন আচার্য ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ ভিক্খু মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। অতীত জন্ম সম্পর্কিত ১৮-প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি। অনাগত জন্ম সম্পর্কিত ৩৯-প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি। বর্তমান সম্পর্কিত ৫-প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি সহ মোট ৬২-প্রকার মিথ্যাদৃষ্টি। ০৪ (চার) প্রকার শাশ্বত দৃষ্টি- ১। লক্ষাধিক জন্মের আগে জন্ম ক্রমপর্যায়কে দেখার সমর্থ পূর্বনিবাস অনুস্মৃতি অভিজ্ঞাণ প্রাপ্ত সেই নিজের বহুলক্ষাধিক জন্মের আগে তার এই নাম ছিল, এই বংশের জন্ম হয়েছি তার দেহের আত্মার সাথে বসবাসকারী সত্বলোক নিত্য বলে ধারনা করা মিথ্যাদৃষ্টি। ২। সংবর্ত, বিবর্ত ১০ কল্প পৃথিবী ধরে জন্মের ক্রমপর্যায়কে দেখার সমর্থ সেই নিজের বহুলক্ষাধিক জন্মের মধ্যে তার এই নাম ছিল, এই বংশের জন্ম হয়েছি তার দেহের আত্মার সাথে বসবাসকারী সত্বলোক নিত্য বলে ধারনা করা মিথ্যাদৃষ্টি। ৩। ৪০ কল্প পৃথিবী ধরে জন্মের ক্রমপর্যায়কে দেখার সমর্থ সেই নিজের বহুলক্ষাধিক জন্মের মধ্যে তার এই নাম ছিল, এই বংশের জন্ম হয়েছি তার দেহের অাত্মার সাথে বসবাসকারী সত্বলোক নিত্য বলে ধারনা করার মিথ্যাদৃষ্টি। ৪। ধ্যান অভিজ্ঞাণ বিনে কাল্পনিকভা

দোষমুক্ত সুখই চির অম্লান অনবদ্য সুখ।

Image
“দোষমুক্ত সুখই চির অম্লান অনবদ্য সুখ”, আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। দোষমুক্ত সুখই চির অম্লান ও অনবদ্য সুখঃ - বুদ্ধ অনাথপিণ্ডিক শ্রেষ্ঠীকে ০৪-প্রকার লৌকিক সুখের কথা বলেছিলেন- ১। অত্থিসুখ- অভাব না থাকা সুখ। ২। ভোগসুখ- পরিভোগের সুখ। ৩। আনণ্যসুখ- ঋণমুক্তসুখ। ৪। অনবদ্যসুখ-দোষমুক্তসুখ। অত্থি সুখঃ মানুষ তার কাঙ্খিত আশা সফল হলে যে সুখ উৎপন্ন হয় সেটি "অত্থিসুখ" । এ সুখটা- ব্যবসা, রোজগার, অবস্থা, অভাব না থাকার সুখ। লৌকিক জীবনে কোন কিছুরই অভাব নেই। কায়িক-মানসিক সূখে সুখি হয়। এ সুখকে বুদ্ধ 'অত্থিসুখ' বলেছেন। এ সুখটা যতক্ষণ অভাব থাকে না ততক্ষণ সুখ হয়। অভাব উপস্থিত হলে এ সুখ আর থাকে না। তাই এ সুখ ধ্রুব সুখ নয় সাময়িক স্বস্তি সুখ। ভোগ সুখঃ ব্যবহার্য সুখকে ভোগের সুখ বলে। দামীদামী বাড়ি গাড়ি ইত্যাদি মন যা চাই তা ব্যবহার করে সেটি ভোগসুখ। অসুখ হলে কোন পরিস্থিতির কারণে এ ব্যবহার্য গুলো সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে এ ভোগসুখ থাকে না তাই এ সুখও ধ্রুবনিত্য সুখ নয়। আনণ্য সুখঃ প্রত্যেক মানুষের কোন না কোন সমস্যা থাকে। কোন সমস্যার কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে গেলে সবসময় মানসিক অশান্তিতে ভোগে। ঋণমুক্ত মান

আশ্বাস-প্রশ্বাস ভাবনার সুফলতা।

Image
আশ্বাস-প্রশ্বাস ভাবনার সুফল দেশনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।  কিভাবে ভাবনা করতে হয় ?    আশ্বাস-প্রশ্বাস ভাবনা করলে ৩টি মিথ্যাদৃষ্টি ছিন্ন হয়। মিথ্যাদৃষ্টিকে আলাদাভাবে ছিন্ন করার প্রয়োজন নেই। মিথ্যাদৃষ্টি ছিন্নমূলক ধর্মশ্রবনের পর বিদর্শন ভাবনা করলে সবল বিদর্শন হয়। এ সবল বিদর্শন ভাবনা নির্বান পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। আশ্বাস-প্রশ্বাস ভাবনা করে মিথ্যাদৃষ্টিকে কিভাবে ছিন্ন করে? আশ্বাস বায়ু ধাতুরূপ নাসিকাগ্রে স্পর্শ হয়ে ব্যয় হয়ে যায়। পুন প্রশ্বাস বায়ু ধাতুরূপও নাসিকাগ্রে স্পর্শ হয়ে ব্যয় হয়ে যায়। ইহা ক্ষণভঙ্গুর বায়ু ধাতুরূপের স্বভাব। এরুপ যতবার আশ্বাস প্রশ্বাসের বায়ু ধাতুরূপ ভঙ্গুরকে দর্শন হবে ততবার শাশ্বতদৃষ্টি (নিত্য ধারনা) ছিন্ন হয়। আশ্বাস প্রশ্বাসটা বায়ু ধাতুরূপ। আশ্বাস প্রশ্বাস বায়ু ধাতুরূপকে জানাটা নামধাতু। এ ক্ষণভঙ্গুর নাম-রূপকে আমি-সে-পুরুষ-স্ত্রী-সত্ত্বা-আত্মা- বলে ধারনা করলে সৎকায়দৃষ্টি ছিন্ন হয়। আশ্বাস বায়ুটা আশ্বাসের পর ব্যয় হয়ে গেলেও আশ্বাস বায়ুরূপের কারণেই প্রশ্বাস বায়ুরূপ উৎপন্ন হয়েছে (আশ্বাস ব্যয়ের জায়গায় প্রশ্বাস রিপ্লেস হয়েছে) বলে জানলে; কার্যকারণ অবিশ্বাস (পুনজন্ম বা পুন উৎপন্ন অ

স্বভাব ধর্ম কি।

Image
স্বভাব ধর্ম কি আমি আমার সত্ত্বা আত্মা জীব আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। স্কন্ধ তো স্কন্ধ ধর্মই হয়। আমি-আমার-সে-তুমি-পুরুষ- স্ত্রী-সত্ত্বা আত্মা জীব নহে। স্কন্ধ (সমষ্টি) হল পরমার্থ ধর্ম। এ পরমার্থ ধর্ম নিজের স্বভাবকে দেখিয়ে থাকে। এ স্কন্ধ স্বভাবে যথাভূত জ্ঞান প্রয়োগ হয় না বলে সম্মুতি ব্যবহারিক আকৃতিতে আটকা পরে। স্কন্ধ স্বভাব ধর্ম তাদের নিজেদের স্বভাবকে সবসময় বহনকারীকে দেখিয়ে থাকে সম্যক স্মৃতি (খেয়াল) করে না বলে দেখে না। স্কন্ধ দেখিয়ে থাকার স্বভাব ধর্মতাকে শ্রদ্ধা, স্মৃতি, বীর্য, সমাধি, প্রজ্ঞাগুলো সমতা ঠিকঠাক থাকলে স্কন্ধ দেখিয়ে থাকার সেই নাম-রূপের স্বভাব ধর্মগুলোকে সমন্বয় প্রয়োগ জ্ঞানে দেখতে পাই। স্কন্ধ দেখিয়ে থাকা স্বভাব ধর্মগুলোকে ধর্মের ধর্মতঃ দেখে নেওয়ার কর্মস্থান কাজটা জ্ঞানের কাজ। স্কন্ধ তার স্বভাব ধর্মকে দেখিয়ে থাকলেও আমি-আমার-সে-তুমি-পুরূষ-স্ত্রী-সত্ত্বা আত্মা জীব ব্যবহারিক আকৃতি অবিদ্যা ঢেকে রাখার কারণে স্বভাব ধর্মকে যথাভূত করে দেখতে পায় না। নাম-রূপ সংস্কার স্বভাবধর্ম উদয়-ব্যয়কে প্রয়োগ "সন্দিট্ঠিকো, এহিপস্সিকো" জ্ঞানের দ্বারা স্বয়ং জ্ঞাত হলে যথা

ধর্মানুদর্শন সতিপট্ঠান দেশনা।

Image
ধর্মানুদর্শন সতিপট্ঠান দেশনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। ধর্মানুদর্শন= ধর্ম + অনুদর্শন। ধর্ম কি? পরমার্থের আপন স্বভাবকে ধর্ম বলে। অনুদর্শন কি? স্বভাবধর্মকে স্বভাবধর্মরুপে অবিপরীত জানাকে অনুদর্শন বলে । স্বভাবধর্ম যেভাবে থাকে ঠিক সেভাবে দর্শন করাকে ধর্মানুদর্শন বলে। দর্শন করা মানেই চর্ম চোখের দেখা নয় জ্ঞানের চোখে দর্শন করাকে বুঝায়। স্বভাব ধর্মকে জ্ঞানের চোখে দর্শন করা যায় বলেই সম্যকদৃষ্টি প্রধান ধর্মানুদর্শন বলে। বুদ্ধের শাসনের মূল সারঃ লব্ধ পঞ্চস্কন্ধকে সত্ত্ব আত্মরুপে মিথ্যা ধারনা করে, পঞ্চকাম আলম্বনকে সুখ বলে ভুল ধারনা করে এই দুুই অন্তের মধ্যে এক কামান্ত (অনর্থকর গ্রাম্যাচরণ)। স্কন্ধের স্বভাবধর্ম প্রকৃতির বাস্তব সম্মত পরমার্থ সত্যকে সত্যরুপে না জেনে কাল্পনার তৈরির ভুল ধারনায় জন্মানো আরেক অনর্থকর অন্ত হল আত্ম কৃচ্ছ্র সাধন (দুষ্করাচরণ)। এই দুই অনর্থকর অন্ত মুক্ত আচরণটা একমাত্র বুদ্ধের শাসন। বুদ্ধের শাসনের মূলসার হলো সম্যকদৃষ্টি মার্গজ্ঞান। পঞ্চস্কন্ধ উৎপত্তির মূল কারনকে জানতে হলে ধাতুর স্বভাবধর্মকে জানতে হয়। পঠবীধাতু (মাটি)- শক্ত-নরম মাটির স্বভাব। আপোধাতু (পানি)- গঠন নিঃসরণ পানির স্বভাব।

সমস্যা তৈরি করলে মনের অশান্তি হয়।

Image
সমস্যা তৈরি করলে মনের অশান্তি হয় দেশনায়  ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। জীবনে খাবারের অভাবে কষ্ট, কাপড় চোপড়ের অভাবে কষ্ট, থাকার অভাবে কষ্টের মধ্যেও মানুষ সুখ-শান্তি হাসি-খুশি স্বস্তি-সুখে থাকে। কিন্তু অনেকেই খাবার, কাপড় চোপড়, থাকার জায়গা, গাড়ি, বাড়ি টাকা পয়সা থাকার সত্ত্বেও তাদের কোন সুখ শান্তি নেই এমন মানুষও দেখা মিলে। আমিও মনের কষ্টে খুবই অশান্তিতে আছি। কে কষ্ট দেয়? নিজের মন নিজেকে কষ্ট দেয়। নিজের চিত্তকে সুখ শান্তিতে রাখতে না জানার কারণেই এ অশান্তি হয়। জীবনে যে চিত্তকে সুখে রাখতে জানে সে সুখশান্তিতে থাকে। জ্ঞান থাকলে তো আরো বেশি বেশি সুখ শান্তিতে থাকতে পারে। অজ্ঞ শতবর্ষ আয়ু নিয়ে বেঁচে থাকলেও তার বাঁচার কোন মানেই হয় না। জ্ঞানী একদিন বেঁচে থাকলে সার্থক। মানুষ মনের সুখশান্তিতে থাকার জন্য কতকিছু করে। যে যতকিছু করুক না মানসিক সুখশান্তি পায় না। কিয়ৎ যতটুকু পায় সেটিও সাময়িক স্বস্তির পরে আর থাকে না। কেন? নানা সমস্যা উপস্থিত হলে মনের সেই সুখ পাখিটি উড়ে যায়। অনেক সময় সমস্যা একটি যেতে না যেতে আরেকটি উপস্থিত হলে আর কোন এ সুখশান্তি থাকে না। সমস্যা তো জাগতিক ধর্ম। মানুষের জীবনে কোন

প্রতিসন্ধি তত্ত্ব।

Image
প্রতিসন্ধি তত্ত্ব আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। ভূতরূপ-০৪, প্রসাদ-০৫, গোচর রূপ-০৪, ভাবরূপ-০২, জীবিত রূপ-০১, বস্তুরূপ-০১, আহাররূপ-০১। মোট ১৮ টি রূপ কর্মজ নিষ্পন্নরূপ। পরিচ্ছেদ রূপ (আকাশ রূপ)-০১, বিজ্ঞপ্তি রূপ-০২, বিকার রূপ-০৩, লক্ষণ রূপ-০৩। মোট ১০ টি অনিষ্পন্ন রূপ। উপরোক্ত ১৮ টি রূপগুলো- কর্ম, চিত্ত, ঋতু, আহারের কারণে উৎপন্ন হয়। যা চ্যুতি, প্রতিসন্ধি চিত্তের সহজাত হয়ে মাতৃ গর্ভে সন্ধিক্ষণ থেকে কলল, ফেনা, রক্ত, মাংস ও পঞ্চশাখা অঙ্গ পূর্ণকাল পর্যন্ত ১৮টি নিষ্পন্নরূপ গঠন প্রবাহ হয় তা উপচয় রূপ। গর্ভে অঙ্গ পূর্ণকাল থেকে অনিষ্পন্ন রূপ ১০ টি প্রসব সময় পর্যন্ত প্রবাহ হয়। উপচয়+সন্ততি উভয় রূপকে (জাতি বা জন্ম রূপ ) বলে। জন্মের পর থেকে মরণের পর্যন্ত জড়তা, অনিত্যতার মধ্যে সংস্কার জীবন প্রবাহ পরিসমাপ্ত হয়। ইহা রূপের প্রকৃতির নিয়ম। কর্ম, চিত্ত, ঋতু ও আহারের কারণে রূপ উৎপন্ন হয় অসমাপক তেজধাতুর কারণে অনিত্যতা প্রাপ্ত হতে হয়। তেজতাপ সংস্কারের কারণে রূপ উদয় ও বিলয় হয় এতে প্রমাণ মিলে যে অনিত্য, দুঃখ, অনাত্ম লক্ষণ। এ ত্রি-লক্ষণ জ্ঞান লাভ হলে সমস্ত মিথ্যাদৃষ্টি অন্ধের বিশ্বাস পরিসমাপ্ত