Posts

Showing posts from June, 2021

আমরা সবাই কেন রোগী।

Image
আমরা সবাই কেন রোগী? আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। গ্রামের সবাই রোগী। সেই গ্রামে ২৮ জন শারীরিক রোগী। ৮১ জন মানসিক রোগী। ০৩ জন রোগ উপভোগকারী। ০৫ জন রোগ উৎপাদনী। ০১ জন শারীরিক ও মানসিক রোগীর তালিকা তৈরিকারী। ০২ জন চিকিৎসক রয়েছে। তবে সময় থাকলেও কেউই হাসপাতালে গিয়ে সুচিকিৎসা নেয় না। তাই তারা আরোগ্য হতে না পেরে অনন্তকাল রোগ সংসারে বিচরণ করে থাকে। চুলের আগা পায়ের তলা এ সাড়ে ০৩ হাত দেহের ২৮ জন শারীরিক রোগী বলতে ১। পঠবী রোগ ২। আপ রোগ ৩। বাযো রোগ ৪। তেজ রোগগুলো মহাভূত রোগ। ১। চক্ষু ২। কর্ণ ৩। নাসিকা ৪। জিহ্বা ৫। কায়গুলো প্রসাদ রোগ। ১। বর্ণ ২। শব্দ ৩। গন্ধ ৪। রস ৫। স্পর্শগুলো গোচর রোগ। ভাব রোগ-০২ জীবিন্দ্রিয় রোগ আহার রোগ পরিচ্ছেদ রোগ বিজ্ঞপ্তি রোগ-০২ বিকার রোগ-০৩ লক্ষণ রোগ-০৪ মোট ২৮- প্রকার রোগ। এ রোগগুলো থেকে আরো বহুপ্রকার রোগ উৎপত্তির হয়ে থাকে। বুদ্ধের পরমার্থ কথায় "রূপতী'তি রূপং,রূপতী'তি রোগং" রূপ মানেই রোগ, রূপ মানেই বিরূপ। চার মহাভূত ধাতু রূপের অসমতার কারনে রূপ বিরূপ হয়। অসমতার কারক হল তেজ বা তাপধাতু। রূপ নিত্য নয়, উৎপত্তি, স্থিতির মুহুর্তে (স্বস্তি সু

সংযোজন মানুষকে কেন পাগল করে।

Image
সংযোজন মানুষকে পাগল করে আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। সংযোজন অর্থ বন্ধন, শৃঙ্খল, শিকড়, দড়িকে বুঝায়। এ সংযোজন মানুষকে পাগল করে ছাড়ে। এ সংযোজন প্রখর সূর্য তাপের মত, যত বেলা উঠে তত প্রখর হয়। ওরে সংযোজন! কেন সত্ত্বদেরকে এত পাগল করস? মানুষ সংযোজনের বাহিরে নয়। মাতা-পিতা সন্তানের সংযোজন। সন্তান মাতা-পিতার সংযোজন। কেউ স্বামীর সাথে, কেউ স্ত্রীর সাথে, কেউবা প্রেমিক প্রেমিকার সাথে এভাবে জ্ঞাতি, মিত্র, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদির সাথে সংযোজন প্রেম থাকে। সংযোজন অদৃষ্ট দড়ির মত। এ অদৃষ্ট দড়িকে ছিন্ন করা অত সহজ নয়। এটি WireLess সংযোগের মত। এ সংযোজন কঠিন দড়িকে ধরা-ছোঁয়া-দেখা যায় না দৃঢ় সংযোগে থাকে। সংযোজন WireLess সংযোগের মত। পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকে যোগাযোগ করুক না, বোতাম টিপানোর সাথে সাথে রিং পরে। প্রিয় মানুষটি পৃথিবী যে প্রান্তে থাকুক না WireLess মনশক্তি অতিদ্রুত তার নিকটে পৌঁছতে পারে। এমন কি কালগত জ্ঞাতি সত্ত্বার উদ্দেশ্যে পুণ্যদান করলেও WireLess সিস্টেমে পুণ্যরাশি পৌঁছে। যতগুলো সংযোজনের মধ্যে প্রেমের সংযোজনের মত অন্য কোন সংযোজন নেই। এ সংযোজন অত্যন্ত দুঃখজনক। যার প্রেমমাত্রা যতবেশি

বুদ্ধের শ্রাবক সংঘের শিষ্য কেন এত ধর্মদেশনা দেয়।

Image
বুদ্ধের শ্রাবক সংঘের শিষ্য কেন এত ধর্মদেশনা দেয় আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। কেউ জিজ্ঞেস করলো- কেন এত ধর্মীয় লেখালেখি পোষ্ট করে? কেন এত ধর্মালোচনা সভা করে? কেন এত ধর্মদেশনা করে? এ লেখালেখি, ধর্মালোচনা সভা, দেশনা করার উদ্দেশ্য কি? বুদ্ধের সময়ে এক রাজকুমার বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। মনোযোগ দিয়ে ঐ ব্যক্তি ধর্মশ্রবন করছে কি করছেনা না জেনে আন্দাজে কাউকে জোর করে কেন এত ধর্মদেশনা করেন? বুদ্ধ- যদি কেউ এরূপ জিজ্ঞেস করে, তাহলে আপনি তাকে কিভাবে বুঝিয়ে বলবেন? বুদ্ধ বললেন- রাজকুমার তোমার পুত্র-কন্যা আছে কি? একজন বাচ্চা সন্তান আছে। বুদ্ধ রাজকুমারকে আবার জিজ্ঞেস করলেন- সেই অবোধ সন্তান যদি চাঁড়াভাঙা খেয়ে ফেলে তখন এভাবে দেখে থাকবে? নাকি জোর করে ভাঙা টুকরোকে বের করবে? বুদ্ধ! চাঁড়াভাঙা পেটের ভেতর পরে গেলে বাচ্চা মরে যাবে তাই জোর করে বের করে ফেলতে হবে বললেন। তখন বুদ্ধ বললেন- মুখ থেকে রক্ত বের হবে না? বুদ্ধ! সন্তানের মুখ থেকে রক্ত বের হবে ঠিক তবে মরবে না। বুদ্ধ! চাঁড়াভাঙা পেটের ভেতরে পরে গেলে নিশ্চিত মরবে, তাই পেটের ভেতরে পরে যাওয়ার আগে বাচ্চাকে চেপে ধরে জোর করে বের করে ফেলতেই হবে বলল

ধর্মশ্রবন করার উপকারিতা কি।

Image
প্রাত্যহিক ধর্মশ্রবন করুন জ্ঞান প্রজ্ঞা বৃদ্ধি করুন আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। প্রাত্যহিক ধর্মশ্রবনের সুযোগে চিত্ত পরিশুদ্ধির জ্ঞান প্রজ্ঞা বৃদ্ধি অভিবৃদ্ধি হয়। চার অপায়গতি বিনিপাত থেকে মুক্ত হয়। বুদ্ধের অমৃতবচন সম্মত বিদর্শন আচরণ অনুশীলন করলে পরম সুখ নির্বানকে প্রত্যক্ষ করার সক্ষম হয়। ধম্মস্সবন সুত্তংঃ পঞ্চিমে ভিক্খবে আনিসংসা ধম্মস্সেবনে। কতমে পঞ্চ। অস্সুতং সুনাতি। সুতং পরিযোদপেতি। কঙ্খংবিতরতি। দিট্ঠং উজুং করোতি। চিত্তমস্স পসীদতি। ইমে খো ভিক্খবে পঞ্চ আনিসংসা ধম্মস্সেবনতি। ধর্মশ্রবনে ৫টি ফলঃ ১। অশ্রুত ধর্ম শ্রুত হয়। ২। শ্রুত ধর্ম পুনশ্রবনে পরিস্কার হয়। ৩। মনের সন্দেহ দূর হয়। ৪। দৃষ্টিঋজু (সম্যকদৃষ্টি) উৎপন্ন হয়, নৈষ্ক্রম্যসঙ্কল্প দৃঢ় হয়। ৫। ধর্ম শ্রবনে চিত্ত প্রশ্রদ্ধি (প্রশান্তি) হয়। অথবা ১। ইহ জীবনে বিমুক্তি জ্ঞান উদয় হয়। ২। অসুস্থ কালে জ্ঞান উদয় হয়। ৩। মরণের মুহুর্তে জ্ঞান উদয় হয়। ৪। স্বর্গের উৎপন্ন কালে জ্ঞান উদয় হয়। ৫। প্রত্যেকবোধি জ্ঞান উদয় হয়। প্রাত্যহিক চারিত্রিক পুণ্যকর্ম। ঘর শোভা পায় বুদ্ধের (ফরাধাং) আসন থাকলে। স্বস্তি শান্তি হয় ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে।

দান আসলে কি রকম হয়।

Image
দান মাঠে যুদ্ধ করার মত আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। দান পারমীর হেতু না থাকার ব্যক্তির চেতনা কৃপণ হয়, এ ব্যক্তির চাহিদা শেষ নেই। তাই সে যৎ সামান্যও দান করতে পারে না। এ অতৃপ্ত লোকজগত চাহিদার শেষ নেই যত পায় তার চেয়ে আরো বেশি বেশি চায়। তাই প্রাণীমাত্রই তৃষ্ণার দাস। তাই বুদ্ধ ভাষণ করেছিলেন- "ঊনো লোকো অতিত্তো তণ্হাদাসো"- লোকো- এ জগতটা। ঊনো- শুধু প্রয়োজনের জন্য থাকে। অতিত্তো- কোন সময়েও সন্তুষ্ট তৃপ্ত হয় না। তণ্হাদাসো- তৃষ্ণার দাস হয়ে থাকে। ইতি- এরুপে। ভগবা- বুদ্ধ ভগবা। অবোচ- উত্তমরুপে ভাষণ করেছিলেন। অতৃপ্ত তৃষ্ণার চাহিদটা একটি থাকলে আরেকটি চায়। তাই এ স্বভাব বৈশিষ্ট্য ব্যক্তি সে নিজের কোন কিছুকে ত্যাগ করতে কৃপণতা করে। বুদ্ধের অমৃত বচনে- দান একটি মাঠের যুদ্ধের মত। যে ব্যক্তি মরণকে ভয় করে সে যেমনি যুদ্ধ করতে পারে না, তেমনি যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ শেষ হয়ে যাবে এমন ভয় করে সে কখনো দান করার সাহস বা চেতনা থাকে না। কারণ সে কৃপণ। মরণকে ভয় না করা ব্যক্তি যেমনি যুদ্ধ করার সাহস থাকে, তেমনি ধন-সম্পদ শেষ হয়ে যাবে এমন ভয় না করার ব্যক্তিই সশ্রদ্ধে দান করতে পারে, তথা দানবীর হতে

মহাসুপিন বা বহুস্বপ্ন মানে কি।

Image
মহাসুপিন (বহুস্বপ্ন) সম্পর্কিত আলোচনা ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। ভন্তে নাগসেন এ জগতে স্ত্রী-পুরুষ, ভাল-মন্দ, দেখা-অদেখা, করা-না করা, অন্তরায় যুক্ত-অন্তরায় মুক্ত দূরে বা কাছে স্বপ্ন দেখে, হাজারো বেশি বিষয় নিয়ে দেখে, এ স্বপ্নগুলো কি? এ স্বপ্নগুলোকে কারা দেখে? মহারাজ! যে কোন আলম্বন চিত্তের মধ্যে উৎপন্ন হয়, সেই আলম্বনকে স্বপ্ন দেখে। মহারাজ ! এই ০৬ জন স্বপ্ন দেখে থাকে- (১) বায়ুপ্রদাহ জনিত স্বপ্ন দেখে। (২) পিত্ত দুর্বল জনিত স্বপ্ন দেখে। (৩) হাঁপানি রোগ জনিত স্বপ্ন দেখে। (৪) দেবগণের ক্রিয়া জনিত স্বপ্ন দেখে। (৫) অভ্যাস জনিত স্বপ্ন দেখে। (৬) পূর্বনিমিত্ত স্বপ্ন দেখে। মহারাজ ! সেই ০৬টি স্বপ্নের পূর্বনিমিত্ত স্বপ্নই সঠিক হয়। অন্যগুলো সঠিক হয় না। ভন্তে নাগসেন! যে পূর্বনিমিত্ত স্বপ্ন দেখে তার চিত্ত কি নিজের ইচ্ছামতে আলম্বনকে নিরীক্ষা করে? নাকি সেই আলম্বনটা চিত্তের পূর্বনিমিত্ত উৎপন্ন হয়? নাকি অন্য কেউ এসে বলে দেয়? মহারাজ ! যে স্বপ্ন দেখে তার চিত্ত এমনিতে সেই আলম্বনকে নিরীক্ষা করে না, অন্য কেউ এসেও বলে দেয় না। সত্যিকার অর্থে সেই আলম্বনই চিত্তের পূর্বনিমিত্ত উৎপন্ন হয়। মহারাজ ! উপমা

বিভাজ্যধর্ম বনাম মিথ্যাদৃষ্টি যুক্তিখণ্ডন মানে কি।

Image
বিভাজ্যধর্ম বনাম মিথ্যাদৃষ্টি যুক্তিখণ্ডন আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। নির্বাণ সম্পর্কিত সত্য জ্ঞান না থাকলে মিথ্যাদৃষ্টি হয়। নাম-রূপ নিরোধ সত্যকে নির্বাণ বলে। তৃষ্ণা ক্ষীণবীজকে নির্বাণ বলে। নির্বাণ পরম নিবৃত্তধাতু। নির্বাণে কিচ্ছু নেই ধারনা করলে উচ্ছেদ মিথ্যাদৃষ্টি। নির্বাণকে সাগর, শহর, নগরের মত ধারনা করলে শাশ্বত মিথ্যাদৃষ্টি। নির্বাণ কি, মিথ্যাদৃষ্টি কি এ তত্ত্বকে বুঝার যথাভূত জ্ঞান না থাকলে মিথ্যাদৃষ্টি হয়। নির্বাণে তৃষ্ণা শেষ হয়। নির্বাণে নাম-রূপ শেষ হয়। নির্বাণে কিচ্ছু নাই ধারনা করলে উচ্ছেদদৃষ্টি হয়। তাই বুদ্ধের দেশিত যথাধর্ম নির্বাণকে জানতে হয়। উক্ত দু'দৃষ্টি থেকে বের হয়ে মধ্যপন্থা মার্গসত্য পথে নির্বাণে পৌঁছানো যায়। যে ধরণ অঢেল দান করুক না দৃষ্টিগত দান হলে নির্বাণে পৌঁছতে পারে না। দান শীল পুণ্যকর্ম নির্বাণে হেতু হয় ঠিক তবে শাশ্বতদৃষ্টি উচ্ছেদদৃষ্টি জড়িত থাকলে নির্বাণের হেতু হয় না। প্রতিত্যসমুৎপাদ নিদানে অবিদ্যা জনিত পাপ, পুণ্য, ধ্যান অভিসংস্কার কর্ম পরবর্তী জন্মে কর্মানুসারে প্রতিসন্ধি বিজ্ঞাণ হয়। নির্বাণ হয় না। বিদর্শন জ্ঞানই একমাত্র নির্বাণ গামিনী প