৩৭ প্রকার বোধিপক্ষিয় ধর্ম মানে কি।।

৩৭-প্রকার বোধিপক্ষিয় জ্ঞান বা বোধিপক্ষীয় ধর্ম আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ ভিক্খু মহোদয়।

৩৭ প্রকার বোধিপক্ষিয় জ্ঞান দেশনা।


বোধিপক্ষীয় ধর্ম-

বোধি=পরিজ্ঞাত আর্যমার্গ।

পক্খ=ভাগ বা পক্ষ বা অংশ। ইয=ইহা হয়।

বোধিপক্খিয=ইহা আর্যমার্গ এর পরিজ্ঞাত অঙ্গ বা মার্গজ্ঞানের অঙ্গসমূহ বা মার্গজ্ঞান অর্জনের পক্ষে উপকারক ধর্মাঙ্গ সমূহকে বোধিপক্ষিয় ধর্ম বলে।

বোধি-পরিজ্ঞাত মার্গজ্ঞান। পক্ষিয়-পক্ষের অংশ।


সতিপট্ঠান ০৪-প্রকার (স্মৃতি প্রস্থান)।

সম্মপ্পধান ০৪-প্রকার (সময়কার প্রধান)।

ইদ্ধিপাদ ০৪-প্রকার (ঋদ্ধিপাদ)।

ইন্দ্রিয ০৫-প্রকার (ইন্দ্রিয়)।

বল ০৫-প্রকার।

বোজ্ঝঙ্গ ০৭-প্রকার (বোধ্যঙ্গ)।

আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ।


সতিপট্ঠানঃ

সতিপট্ঠান অর্থ স্মৃতি স্থাপনের দৃঢ় বা অতি দৃঢ়ভাবে স্মৃতি স্থাপন করা।


স্মৃতি চৈতসিক স্থাপন যে কোন আলম্বনে দৃঢ় হয়। স্বরূপে স্মৃতি চৈতসিক ০১টি হলেও ০৪-আলম্বন, ০৪-প্রকার ভেদ, ০৪-কৃত্যের কারনে সতিপট্ঠান ০৪-প্রকার হয়।


দ্বার+আলম্বন=সংযোগ বা সংস্পর্শ কারনের উৎপন্ন (কায়, বেদনা, ধর্ম ও চিত্ত) চার কর্মস্থান সমূহের স্মৃতিকে প্রধান রেখে অনুশীলন রত থাকার নাম হচ্ছে সতিপট্ঠান বা স্মৃতিপ্রস্থান।


০৪-প্রকার সতিপট্ঠানঃ

১। কাযানুপস্সনা সতিপট্ঠান।

২। বেদনানুপস্সনা সতিপট্ঠান।

৩। চিত্তানুপস্সনা সতিপট্ঠান।

৪। ধম্মানুপস্সনা সতিপট্ঠান।


১. কাযানুপস্সনা সতিপট্ঠান- 

কায়ানুদর্শন সতিপট্ঠান। কায+অনু+পস্স+সতি+পট্ঠান। কায=রূপকায়। অনু=পেছন। পস্স=দেখা বা দর্শন করা। সতি=স্মৃতি বা জানা। পট্ঠান=প্রস্থান বা কর্মস্থানের প্রধান। আন+অপানা=আনাপানা। আন=আশ্বাস, অপান=প্রশ্বাস বা রূপকায়ে স্মৃতিস্থাপন করা বা স্মৃতি সহকারে উদয়-বিলয় ধর্মী রূপকায় পিছন পিছন পিছু হয়ে অনুসরণ করে জানা বা দর্শন করাটাই কায়ানুদর্শন সতিপট্ঠান। অথবা দেহের চুল,নখ ইত্যাদি ৩২ প্রকার কোট্ঠাসগুলো এর পুনঃপুন ভাবনা করলে অশুভ সংজ্ঞা স্মৃতি উৎপন্ন হয়। সতিপট্ঠান অনুশীলনের দ্বারা স্কন্ধ সমূহের শুভ ধারণা বিপ্রলাশকে ছেদন করতে পারে।


২. বেদনানুপস্সনা সতিপট্ঠান- 

বেদনানুদর্শন স্মৃতিপ্রস্থান। বেদনার ধর্মে স্মৃতিকে সম্যকভাবে স্থাপন করে দর্শন করার নামই বেদনানুদর্শন সতিপট্ঠান বা সুখ-দুঃখ ও উপেক্ষা বেদনা সমূহকে জানার বা পরিজ্ঞাত হবার জন্য পুনঃপুন অনুশীলনকারী হচ্ছে স্মৃতি। এই স্মৃতিপ্রস্থান বেদনা সমূহের পুনঃপুন অনুশীলন করলে প্রতিনিয়তই উদয়-বিলয় পীড়নে, কষ্টে, দণ্ডে ভয় দর্শনের জ্ঞানোদয় হয়। এ স্মৃতিপ্রস্থান ভাবনার দ্বারা নামরূপ এর সুখ বিপ্রলাশ (ভুল ধারণা) কে ছেদন করে।


৩. চিত্তানুপস্সনা সতিপট্ঠান-

চিত্তানুদর্শন স্মৃতিপ্রস্থান। স্বরাগ, বীতরাগাদি চিত্ত সমূহের সম্যকস্মৃতি স্থাপন হচ্ছে চিত্তানুদর্শন স্মৃতিপ্রস্থান। অথবা চিত্তকে লক্ষ্য রেখে এ চিত্ত রাগ চিত্ত,এ চিত্ত রাগমুক্ত বিরাগাদি প্রকারভেদ চিত্তকে অনিত্য দর্শনে পুনঃপুন অনুশীলনকারী হচ্ছে স্মৃতি। এ স্মৃতি অনুশীলনের দ্বারা চিত্তে নিত্যতা ভুল ধারণা বিপ্রলাশ থাকে না।


৪. ধম্মানুপস্সনা সতিপট্ঠান-

ধর্মানুদর্শন স্মৃতিপ্রস্থান। নীবরণাদি ধর্মের স্মৃতি স্থাপন হচ্ছে ধর্মানুদর্শন স্মৃতিপ্রস্থান বা সংজ্ঞাস্কন্ধ ও সংস্কারস্কন্ধকে পুনঃপুন অনুশীলনের উপযোগী হচ্ছে স্মৃতি। উক্ত ধর্ম সমূহের অনাত্মতার লক্ষণোদয়ের পুনঃপুন অনুশীলন করলে নানা কৃত্যে কেবল পরমার্থ ধর্ম দর্শন হয়। আত্ম (আয়ু, জীবন, আত্মা) অস্তিত্ব না থাকা বা অনাত্মতার প্রতিয়মান হয়। এ ধর্মানুদর্শন স্মৃতি প্রস্থানের দ্বারা অত্তপল্লাপ (আত্মপ্রলাপ-আত্মা অস্তিত্ব স্বীকার প্রলাপ) থাকে না।


সম্যক প্রধানঃ

সম্যকভাবে সম্পাদন করার সক্ষমই সম্যকপ্রধান। চর্ম, রক, হাড় অবশিষ্ট থাকুক মাংস শুকিয়ে যাক এরূপ চার অঙ্গ পূর্ণ বীরিয বা প্রচেষ্টা বা চার কৃত্য সমূহ পূর্ণ করার সক্ষম এবং প্রশংসার যোগ্যতমই বীরিয বা প্রচষ্টা। স্বরূপে বীরিয বা বীর্য বা প্রচেষ্টা একটি হলেও কৃত্য অনুসারে চারটি হয়ে থাকে।


০৪ প্রকার সম্যক প্রধানঃ

১। উৎপন্ন অকুশল সমূহকে প্রহাণ করার প্রচেষ্টা। কৃত অকুশল কর্মের অনুশোচনা হয়ে থাকলে অকুশল বৃদ্ধি হবে। অনুশোচনা করে কৃত অকুশল কর্ম কখনো ক্ষয় হবে না,সেভাবে অকুশল কর্ম সমূহকে প্রহান করার প্রচেষ্টা।


২। অনুৎপন্ন অকুশল সমূহ জন্ম জন্মান্তরে কোন কালে উৎপন্ন না হোক এরূপ প্রচেষ্টা, ধৈর্য, বীর্য। অনুৎপন্ন অকুশল যাতে উৎপন্ন না হতে পারে দান, শীল, কর্মস্থান ভাবনা করা, বন্দনাদি পূণ্যকর্ম সম্পাদন করা,ধর্ম শিক্ষা পাঠ দেয়া, নেয়া, লিখা, প্রকাশ, প্রচার করার অর্থ হচ্ছে সম্যকপ্রধান।


৩। অনুৎপন্ন যে সমস্ত মহৎ কুশল পূণ্য কর্ম সমূহ উৎপন্ন করার জন্যে দান,শীল,ভাবনা কর্ম সম্পাদন করে থাকার অর্থই সম্যকপ্রধান।


৪। উৎপন্ন যে সমস্ত মহৎ কুশল পূণ্য কর্ম সমূহ উত্তোরোক্তর অভিবৃদ্ধির জন্যে দান,শীল এবং ভাবনা রত থাকা অর্থই সম্যকপ্রধান।


০৪ ঋদ্ধিপাদঃ

পরিপূর্ণ সাফল্য অর্জনের ভিত্তি হচ্ছে ঋদ্ধিপাদ। ঋদ্ধি=শক্তি। পাদ=ধাপ।


১। ছন্দিদ্ধিপাদ-ছন্দ বা ইচ্ছার ধাপ থাকলে পরিপূর্ণ হয়।

২। বীরিযিদ্ধিপাদ-বীর্য,ধৈর্য,প্রচেষ্টার ধাপ থাকলে পরিপূর্ণ হয়।

৩। চিত্তিদ্ধিপাদ-চিত্ত বা মনের ধাপ থাকলে সাফল্যার্জন হয়।

৪। বীমংসিদ্ধিপাদ-প্রজ্ঞার ধাপ থাকলে পরিপূর্ণ হয়।


ছন্দ ঋদ্ধিপাদঃ

ছন্দিদ্ধিপাদ বা ছন্দঋদ্ধিপাদ বা ইচ্ছাশক্তি হচ্ছে চাওয়া, পাওয়া, সাফল্যের পৌঁছার ক্ষেত্রে অতি উত্তম। না পেলে ঝটপট করে;যেটা চায় সেটা না পাওয়ার পর্যন্ত ক্ষান্ত হয় না। না পেলে আমৃত্যুকাল ধরে লড়াই করে। না পেয়ে থাকার চেয়ে মৃত্যু শ্রেয় মনে করে এই ছন্দঋদ্ধিপাদ।


বীর্যঋদ্ধিপাদঃ

বীরিযিদ্ধিপাদ বা বীর্যঋদ্ধিপাদ বা ধৈর্যশক্তি যা চর্ম,রক,মাংস শুকিয়ে যাক হাড়মাত্র অবশিষ্ট থাকুক চার অঙ্গ পরিপূর্ণতা হচ্ছে বীর্যঋদ্ধিপাদ। এই বীর্যশক্তি,ধৈর্যশক্তির অধিকারী ব্যক্তি ঋদ্ধিপাদকে ভিত্তি করে সাফল্য শীর্ষের পৌঁছার দিন রাত বছর যতই কষ্ট হোক না কখনো ধৈর্য,বীর্য হারায় না।


চিত্তঋদ্ধিপাদঃ

চিত্তঋদ্ধিপাদ হচ্ছে বুদ্ধের দুর্লভ শাসন সদ্ধর্ম সাক্ষাতে অমৃত ধর্ম শ্রবন সুযোগ হলে চিত্ত অতি শক্তি সম্পন্ন হয়। জীবনে ধন সম্পদ যশ খ্যাতি লাভ সৎকার পুঁথিগত বিদ্যা পারদর্শী হলেও সে বিষয়াদিতে ভোগের মনমানসিক না থাকায় লোকুত্তর পরমার্থ ধর্মে ধাবিত হলে চিত্ত ঋদ্ধিপাদ হয়।


বীমংসাঋদ্ধিপাদঃ

বীমংসাঋদ্ধিপাদ (প্রজ্ঞা) হচ্ছে অবর্ণনীয় অপায়িক দুঃখকে সম্যকভাবে দেখে। প্রজ্ঞা ইদ্ধি শক্তির সুফল সমূহকে সম্যকভাবে জানে। এই প্রজ্ঞা দুর্বোধ্য পরমার্থ গভীরতা স্ববভাব ধর্মের বিচরণ করতে পারে। প্রজ্ঞা সম্পন্ন ব্যক্তি সমস্ত লৌকিক সম্পদে প্রকৃত চিত্তের আরস খুঁজ না পেয়ে সারযুক্ত কথিত দুর্বোধ্য প্রজ্ঞা ধর্মের চিত্ত রমিত হয়। যতই সুক্ষ্ম উপলব্ধির দুর্বোধ্য হোক না তা সম্পাদন করার সঙ্কল্প জাগে।


পঞ্চেন্দ্রিয়ঃ

১। সন্ধিন্দ্রে-শ্রদ্ধা ইন্দ্রিয় চিত্তকে কর্তৃত্ব করে।

২। বীরিযিন্দ্রে-বীর্য ইন্দ্রিয় চিত্তকে কর্তৃত্ব করে।

৩। সতিন্দ্রে-স্মৃতিন্দ্রিয় চিত্তকে কর্তৃত্ব করে।

৪। সমাধিন্দ্রে-সমাধি ইন্দ্রিয় চিত্তকে কর্তৃত্ব করে।

৫। পঞ্ঞিন্দ্রে-প্রজ্ঞা ইন্দ্রিয় চিত্তকে কর্তৃত্ব করে।


শ্রদ্ধা ইন্দ্রিয়ঃ

সদ্ধিন্দ্রে বা শ্রদ্ধা ইন্দ্রিয় হচ্ছে অন্ধত্বের দান,শীল,ভাবনা কর্মের উৎপন্ন সাধারণ শ্রদ্ধা নয়। ইহা আনাপানা কর্মস্থানাদি ভাবনার দ্বারা তেজবল শক্তি ধারণ এবং অতিকায় হস্তীর ন্যায় বলবান হতে স্বযত্নে অনুশীলন করার ভাবনাময় শ্রদ্ধা দিয়ে চিত্তকে কর্তৃত্ব বা শাসন করা।


বীর্য ইন্দ্রিয়ঃ

বীরিযিন্দ্রে বা বীর্য ইন্দ্রিয় হচ্ছে সাধারণ বীর্য বা প্রচেষ্টা নয় ইহা ভাবনার বীর্য দ্বারা চিত্তকে কর্তৃত্ব বা শাসন করা।


বীর্য ইন্দ্রিয়ঃ

সতিন্দ্রে বা বীর্য ইন্দ্রিয়ও সাধারণ নয় ইহা ভাবনা রত স্মৃতি দ্বারা চিত্তকে কর্তৃত্ব বা শাসন করা।


সমাধি ইন্দ্রিয়ঃ

সমাধিন্দ্রে বা সমাধি ইন্দ্রিয়ও সাধারণ নয় একাগ্রতার দ্বারা চিত্তকে কর্তৃত্ব বা শাসন করা।


প্রজ্ঞা ইন্দ্রিয়ঃ

পঞ্ঞিন্দ্রে বা প্রজ্ঞা ইন্দ্রিয় (প্রজ্ঞেন্দ্রিয়) ইহাতেও সাধারণ না হয়ে স্মৃতি,সমাধি,প্রজ্ঞার দ্বারা চিত্তকে কর্তৃত্ব বা শাসন করা।


পঞ্চবলঃ

১। সদ্ধাবল-শ্রদ্ধাবল দ্বারা বিরোধ বিপক্ষ ধর্মকে নিবৃত্তি করা।

২। বীরিযবল-বীর্য বা প্রচেষ্টাবল দ্বারা বিরোধ বিপক্ষ ধর্মকে নিবৃত্তি করা।

৩। সতিবল-স্মৃতিবল দ্বারা বিরোধ বিপক্ষ ধর্মকে নিবৃত্তি করা।

৪। সমাধিবল- সমাধিবল দ্বারা বিরোধ বিপক্ষ ধর্মকে নিবৃত্তি করা।

৫। পঞ্ঞাবল- প্রজ্ঞাবল দ্বারা বিরোধ বিপক্ষ ধর্মকে নিবৃত্তি করা।

সত্ত বোজ্ঝঙ্গ বা সপ্ত বোধ্যাঙ্গ বা বোধি জ্ঞান লাভের অঙ্গঃ


চার আর্য সত্য ধর্মকে প্রত্যক্ষ করার সক্ষম। মার্গজ্ঞানের অঙ্গ অংশ বিশেষই বোধ্যাঙ্গ।


সপ্তবোধ্যাঙ্গঃ

১। সতি সম্বোজ্ঝঙ্গ বা স্মৃতি সম্বোধ্যাঙ্গ- স্মৃতিপ্রস্থান, স্মৃতিবল, সম্যকস্মৃতি নামক স্মৃতি চৈতসিক।

২। ধম্মবিচয সম্বোজ্ঝঙ্গ বা ধর্মবিচয় সম্বোজ্ঝঙ্গ-বীমংসাঋদ্ধিপাদ, প্রজ্ঞেন্দ্রিয়, প্রজ্ঞাবল, সম্যকদৃষ্টি নামক প্রজ্ঞা চৈতসিক।

অথবা দৃষ্টিবিশুদ্ধি সমূহ ০৫ প্রকার প্রজ্ঞা বিশুদ্ধি। ০৩ প্রকার অনুপস্সনা জ্ঞান এবং ১০ প্রকার বিদর্শন জ্ঞানই ধর্মবিচয়।

৩। বীরিয সম্বোজ্ঝঙ্গ বা বীর্য সম্বোধ্যাঙ্গ- চার সম্যক প্রধান, বীর্যঋদ্ধিপাদ, বীর্যেন্দ্রিয়, বীর্যবল, সম্যক ব্যায়াম নামক চৈতসিক।

৪। পীতি সম্বোজ্ঝঙ্গ বা প্রীতি সম্বোধ্যাঙ্গ- কায়গতস্মৃতির (আশ্বাস-প্রশ্বাস) অনুশীলনের জ্ঞান দর্শন উৎপন্ন হলে প্রীতি অনুভব চৈতসিক হয়।

৫। পস্সদ্ধি সম্বোজ্ঝঙ্গ বা প্রশ্রদ্ধি সম্বোধ্যাঙ্গ- চিত্ত অস্থির, চঞ্চল।চিত্ত নানা চিন্তা বিকারগ্রস্ত কায়িক মানসিক সন্তপ্ত থেকে মুক্ত প্রশ্রদ্ধি বা প্রশান্তি চৈতসিক।

৬। সমাধিসম্বোজ্ঝঙ্গ বা সমাধিসম্বোধ্যাঙ্গ- সমাধিন্দ্রে, সমাধিবল, সমাধি মার্গ ধ্যানাঙ্গ।

৭। উপেক্খাসম্বোজ্ঝঙ্গ বা উপেক্ষা সম্বোধ্যাঙ্গ- কর্মস্থান ভাবনার অনুকূল না হলে নানা আশঙ্কা হয় এবং অনুকূল হলে তত্রমধ্যস্থতা উপেক্ষা চৈতসিক হয়।

সপ্ত চক্ররত্ন বিভূষিত চক্রবর্তী রাজা অতুলনীয় সুখ প্রাপ্তির সদৃশ সদ্ধর্ম শাসনের যোগীগণও অতুলনীয় এই সপ্তবোধ্যাঙ্গ লাভ হলে পরম সুখে সুখী হন।


অষ্টাঙ্গিক মার্গঃ

মার্গ হচ্ছে ক্লেশ কলুষকে প্রহাণ করা।নির্বান গমনের মার্গাঙ্গঃ

১। সম্মাদিদ্ঠি-সম্যকদৃষ্টি।

২। সম্মাসঙ্কপ-সম্যক সঙ্কল্প।

৩। সম্মাবাচা- সম্যক বাক্য।

৪। সম্মাকম্মন্ত-সম্যক কর্ম।

৫। সম্মাআজীব-সম্যক আজীব।

৬। সম্মাবাযাম- সম্যক ব্যায়াম।

৭। সম্মাসতি- সম্যক স্মৃতি।

৮। সম্মাসমাধি-সম্যক সমাধি।


আনন্দ সহগত জ্ঞান সম্প্রযুক্ত নৈষ্ক্রম্য সঙ্কল্প চিত্ত চেতনায় দান, শীল, ভাবনা পূণ্য কর্ম সম্পাদন করে থাকলে; ইহকালে বা কোন না কোন জন্মে বুদ্ধ অথবা শাসন সদ্ধর্ম সাক্ষাতে ধর্ম শ্রবন সুযোগ হলে উপরোক্ত ৩৭ (সাইত্রিশ) প্রকার বোধি পক্ষিয় লোকুত্তর জ্ঞান লাভ নিশ্চিত হবে। 

“ইদম্মে অমত ধম্মদানং নিব্বনস্স পচ্চযো হোতু”। আমার এই উত্তম শ্রেষ্ঠ অমৃত ধর্ম দান নির্বান লাভে প্রত্যয় হোক।

#সাধু-সাধু-সাধু।

লেখক-

স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য 
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের
রাঙ্গামাটি।
তারিখ-০৭/০৮/২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতনতা ও করণীয় কি।

ফেসবুক বা অনলাইনে হয়রানির শিকার হলে কি করবেন।