মৃত্যুর কোন সময় নেই, মরণ মুহুর্তে কি করতে হবে।

যে কোন সময়ে মৃত্যু হবে, কিভাবে মরবে, মরণ পদ্ধতিকে জেনে রাখা দেশনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ ভিক্খু মহোদয়।

মৃত্যুর কোন সময় নেই, মরণ মুহুর্তে কি করতে হবে তা জেনে নিন।


জন্ম যেহেতু হয়েছে, মৃত্যু একদিন হবে এটা চিন্তন সত্য। কিন্তু কিভাবে মৃত্যু হবে তা কেউ জানে না। মৃত্যুর পর কোন গতি হবে তাও নিশ্চিত নয়। তাই ইহ জন্মে পূণ্য কর্ম করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মৃত্যুর সময় পাপ কর্মের বিষয়ে মানুষের মনে অনুশোচনা হয়। এই অনুশোচনা করার কারনে মানুষ মৃত্যুর পর অপায় গতি হতে পারে। তাই মৃত্যুর সময় কি করা উচিত কি করা উচিত নয় তা নিয়ে মূল্যবান দেশনা করেছেন শ্রদ্ধাভাজন ও পরম কল্যাণমিত্র ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। আসুন সাধুবাদের সহিত ভান্তের মূল্যবান দেশনার মূল বিষয় উপলব্দি করি এবং নিজ জীবনে প্রয়োগ করি।

প্রিয় উপাসক- উপাসিকাগণ মরণের পদ্ধতিকে প্রায়ই সময় দেশনা দিয়ে থাকি কারণ যেন মরণের মুহুর্তে নাম-রূপকে উদয়ব্যয় বিদর্শন করতে সহজ হয়।
কেউ কেউ মরণের মুহুর্তে তির্যক লোকে যাবার জন্য, প্রেত লোকে যাবার জন্য, অসূর, নিরয় লোকে যাবার জন্য নিজের চিত্তটি অতীত কৃতকর্মকে নিয়ে কৌকৃত্য (অনুশোচনা) করে।

কিভাবে করে?
আমি মারা গেলে পরিবারে পুত্র-কন্যারা কিভাবে থাকবে। নাতি নাতনীরা কিভাবে থাকবে। এ কাজ কর্মগুলোকে কে সামলাবে। তোমরা মিলেমিশে থাকবে ইত্যাদি মনে কৌকৃত্য হতে হবে।

আরো কিভাবে কৌকৃত্য করে?
আমার নিজের জন্য দান-শীল-ভাবনা করতে পারলাম না। পাপ কর্মতো অনেক করেছি। বলতে গেলে মায়ার বন্ধনের পরে নিজেকে নিজে মারাত্মক ঠকিয়েছি। হিসেব করে দেখলে নিজের জন্য কিছুই করতে পারেনি!

আমি মারা গেলে তারা যেভাবেই হোক সাপ্তাহিক ক্রিয়া করবে। স্মৃতিচারণ করবে, উৎসর্গ পুণ্যদান করে প্রার্থনা করবে মা-বাবারা যেন সুগতি সদ্গতি লোকে উৎপন্ন হোক। কিন্তু তারাইতো জানে না আমার কর্মের কি করুন পরিণতি হয়েছে!

তাই সময় থাকতে নিজের কর্মের গতিকে নিজে নিজে ঠিক করতে না পারলে কেউ এ গতি থেকে ফিরাতে পারবে না।

এ হল মরণের মুহুর্তে মনের কৌকৃত্যর (অনুশোচনার) করুন পরিস্থিতি বা পরিণতি। যে কাজগুলো আগে করেছে সেগুলোকে বারবার চিন্তা করলে কৌকৃত্য হয়। মনের মধ্যে এ কৌকৃত্য প্রবেশ করলে সেটি সুহতি সদ্গতি ও মার্গফলের অন্তরায়। এ কৌকৃত্যর কারণেই সম্রাট অশোক অজগর সাপ হতে হয়েছে।

মরণের মুহুর্তে এ কৌকৃত্য চিত্ত উৎপন্ন হলে সেটিকে উদয়ব্যয় বিদর্শন করা, অনিত্য দুঃখ-অনাত্ম-বিদর্শন করা। সবার উপকারের জন্য দেশনাকে আগাম শুনিয়ে রাখলাম। নাম-রূপ সমষ্টি ধর্মতাকে উদয়ব্যয় বিদর্শন করতে পারলে মরণ মুহুর্তে স্রোতাপত্তি সকৃদাগামী মার্গফল জ্ঞান উদয় হতে পারে। সবার হিত সুখ মঙ্গল হোক।

সাধু-সাধু-সাধু।

লেখক-

স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
তারিখ-২৪ জুলাই ২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতনতা ও করণীয় কি।

মহামঙ্গল সূত্র পালি থেকে বাংলা-২০২১।